Tele Gynecology, Sweden

Telegynecology, Sweden

আজকে আমরা পৃথিবীর সবাই একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সবার মধ্যে কেমন একটা ভয় এবং আতঙ্ক কাজ করছে। কি হবে, কেমন হবে আমরা কিছুই জানিনা। মানব সভ্যতা কোথায় গিয়ে ঠেকবে তাও আমরা জানি না। বিশেষ করে আমাদের মায়েরা একটু বেশি অসহায়। তারা তাদের জীবনের জন্য যতটুকু না চিন্তিত তার চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন তার গর্ভের বাড়ন্ত শিশুটির জন্য।


গত এক মাস ধরে আমি ফেইসবুক এর টেলি গাইনি নামক একটি পেজের মাধ্যমে বাংলাদেশের মা-বোনদের চিকিৎসা বিষয়ক পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করছি। সে মা-বোনদের একটি বড় অংশ গর্ভবতী এবং তাদের মোটামুটি সবারই একটা প্রশ্ন: করোণা ভাইরাসে যদি আক্রান্ত হই তাহলে বাচ্চার কি হবে।


আমি সঠিক কোন উত্তর দিতে পারিনা। গর্ভবতী মা এবং তার গর্ভের বাচ্চা সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞানখুবই সীমাবদ্ধ। আজকে আমাদের কাছে তেমন কোন পরীক্ষিত কোন তথ্য উপাত্ত নেই। সবই অনেকটা অনুমানের উপর ভিত্তি করে পাওয়া। সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েদের উপর কয়েকটি  সমীক্ষা বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।


আমাদের গর্ভবতী মায়েদের করণা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সমাজের অন্যান্য মানুষদের মতোই সমান তবে সে ক্ষেত্রে যাদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশী, যাদের ব্লাডপ্রেসার রয়েছে বা ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য করণায় আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসা অন্যান্য মানুষদের মতোই।  কোন উপসর্গ না থাকলে ভয়েরও কোন কারন নাই।

এসব সমীক্ষায় আমরা প্রধান যে তথ্যটা জানতে পেরেছি সেটা হল সেইসব করোনা আক্রান্ত মায়েদের একটি বড় অংশেরই সময়ের আগেই বাচ্চা প্রসব হয়ে যাওয়া।  জন্মের পর প্রতিটা ক্ষেত্রেই মায়ের দুধ, বাচ্চার রক্ত, বাচ্চার নাড়ী, গর্ভের ফুল, গর্ভের পানি সবকিছু থেকে পরীক্ষা করা হয়েছে। কোন করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এটা আমাদের জন্য  একটা বড় সুখবর।














তাই আমাদের গর্ভবতী মায়েদেরকে বলছি যদি আপনারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন তবে আপনাদের গর্ভের বাচ্চাদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি একেবারেই কম। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর কোথাও কোন বাচ্চার গর্ভকালীন করোণা আক্রান্তের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ডেলিভারি হবে হবে ঠিক অন্যান্য মায়েদের মতো। শুধুমাত্র করণায় আক্রান্ত হওয়ার জন্য সিজার করে ডেলিভারি করার কোন কারণ নেই।

 

তবে করো না আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েদের প্রসবের  পরপরই অবশ্যই  বাচ্চা থেকে এবং গর্ভাশয়ের বিভিন্ন অংশ থেকে টেস্ট করতে হবে। নবজাতকদের ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি অন্যান্য মানুষের চেয়ে বেশি। কারণ নবজাতকদের প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পূর্ণ হয়ে উঠে না। তাই জন্মের পর পরই বাচ্চাকে করনা আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে রাখতে হবে। বাচ্চাকে আলাদা করে রাখার সিদ্ধান্ত টা যদিও অনেক কঠিন এবং আবেগ তাড়িত।  তারপরও বাচ্চার কথা চিন্তা করেই এটাই হবে সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।

 

তারপর এর চিকিৎসা হবে ঠিক অন্যান্য মানুষদের মতোই।

সুতরাং আমাদের গর্ভবতী মায়েদের বলছি আপনাদের ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই। বাসায় থাকুন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে অন্যান্য নিয়মাবলী পালন করুন। এতটুকুই যথেষ্ট।

সুস্থ মা এবং সুস্থ সন্তান সর্বদা  আমাদের লক্ষ্য।

ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।

গর্ভস্রাব (Miscarriage)

ডা: কামাল আহমেদ

গাইনি ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ এবং টেলিমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার

নিশপিং হাসপাতাল, সুইডেন


গর্ভাবস্থার ২২ সপ্তাহ পর্যন্ত যদি গর্ভস্থ ভ্রূণের স্বাভাবিক মৃত্যু হয় তবে সেটাকে আমরা গর্ভস্রাব বা মিসক্যারেজ বলি। সব নিষিক্ত ডিমের আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০ শতাংই মায়ের জরায়ু থেকে বের হয়ে যায় এবং তার ফলশ্রুতিতে গর্ভাবস্থার অবসান ঘটে। বেশিরভাগ সময়ই এটা ঋতুচক্রের বা মাসিকের প্রথমেই ঘটে ফলে বেশিরভাগ মায়েরা এটা বুঝতে পারেন না। এবং সাধারণত মহিলারা এটা কে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি রক্তস্রাব হিসেবেই মনে করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর জন্য ডাক্তার বা হাসপাতালে যোগাযোগ এর প্রয়োজন হয় না।


আরও পড়ুন

টেলিমেডিসিন

ডা: কামাল আহমেদ

গাইনি ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ এবং টেলিমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার

নিশপিং হাসপাতাল, সুইডেন


করোনা ক্রান্তিকাল আমাদের জীবনে অনেক প্রভাব ফেলেছে। আমাদের জীবনকে অনেক বদলে দিয়েছে এই করোনা ভাইরাস বা কোভিদ-১৯। অনেক শব্দ আমরা নতুন করে শিখেছি এবং শিখছি। যেমন পিপিই, কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন, সোশ্যাল ডিসটেন্স, লকডাউন ইত্যাদি। যদিও এসব শব্দ অনেক আগে থেকেই প্রচলিত আছে। করোনা পরিস্থিতি এসব শব্দকে আমাদের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় ও অত্যাবশ্যকীয় করে তুলেছে। যেমন পি,পি,ই বা পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট যা জনস্বার্থে নিয়োজিত কর্মীরা ব্যবহার করে। এই পি,পি,ই   আজ সাধারণ জনগণ ও ব্যবহার করছে। যাদের এসব পিপিই ব্যবহার করার কথা, তারা ও সবাই এ সম্পর্কে খুব একটা বেশি জানত না। আজ বাংলাদেশের প্রায় সব জনগণই এ বিষয়ে অবগত।  এরকম আরেকটি শব্দ হচ্ছে টেলিমেডিসিন, যা আজ শুধু জনপ্রিয় নয় বরং অত্যাবশ্যকীয়‌ ও।

আরও পড়ুন













আরও পড়ুন

আমি ডা: কামাল আহমেদ

একজন গাইনি ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ এবং টেলিমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার।

বর্তমানে সুইডেনের নিশপিং হাসপাতলে গাইনী ও প্রসূতি বিভাগে সিনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত।


আমি বাংলাদেশের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করার পর ওই একই হাসপাতালে গাইনি ও প্রসূতি বিভাগে ইন্টার্নশিপ করি । তারপর ঢাকাতে কয়েক বছর প্রাইভেট প্র্যাকটিস করি। সুইডেন আসার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের স্বনামধন্য প্রফেসর ডাক্তার আনোয়ার হোসেন স্যার এর অধীনে রেসিডেন্ট ইনচার্জ হিসেবে কাজ করি। পাশাপাশি তখন গণবিশ্ববিদ্যালয়, সাভারে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিকেল ফিজিক্স এ মাস্টার্স পড়াশোনা চালিয়ে যাই। সেখানে সুইডেনের সবচেয়ে বড় এবং নামকরা ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির প্রফেসর ডক্টর মান্নান মৃধার সাথে পরিচয় ঘটে। সেই সুবাদে প্রফেসর মান্নান মৃধা স্যারের সরাসরি সহায়তায় সুইডেনে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এ মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হয়ে সপরিবারে সুইডেনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করি।


আরও পড়ুন